আবারও কী মহামন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব, নাকি মানবতা বাঁচাতে বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধানদের বিবেক জাগ্রত হবে? এই প্রশ্ন সামনে রেখে সোমবার শুরু হয়েছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বার্ষিক সভা। দুই শক্তিশালী উন্নয়ন সহযোগী চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘সেন্সলেস ওয়ার’ আখ্যায়িত করে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। তারা জানায়, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অনেকেই হয়তো সময়মতো ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারবে না। কাজেই লেনদেন ভারসাম্যের চাপে থাকা সদস্যদের ৪৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের কিস্তি পরিশোধে উন্নয়ন সহযোগীদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানায় বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ।
প্রায় ৩ বছর পর বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এর বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২২ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সোমবার শুরু হওয়া ৭ দিনের বৈঠকে অংশ নিতে ১৮৮টি সদস্য দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। রেজিস্ট্রেশন বুথের সামনে অংশগ্রহণকারীদের ছিল দীর্ঘ অপেক্ষা।
বার্ষিক সভার প্রথম দিনের সকালটায় বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার আলোচনায় স্পষ্ট হলো বৈঠকের অগ্রাধিকার বিষয়। করোনাপরবর্তী মন্দা পুনরুদ্ধার হতে না হতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে শ্লথ করে মন্দার শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং ২০২৬ সাল পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলার; যা জার্মানির অর্থনীতির সমান।
এ সময় বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস জানান , স্বল্প সুদে সহজ শর্তে যে ঋণ পেয়ে আসছে উন্নয়নশীল দেশগুলো, মন্দার এ সময়ে তা পরিশোধ নীতি কি হবে সেটা ভেবে তিনি শঙ্কিত।
এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল যোগ দিয়েছে এ সম্মেলনে। গভর্নর জানান, ঋণ পরিশোধ নিয়ে বিশ্বব্যাংক সংশয় জানালেও পরিশোধের সক্ষমতা আছে বাংলাদেশের।
আইএমএফ এর কাছে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ এবং বাজেট সহায়তা নিয়ে যে দরকষাকষি তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মিলতে পারে সপ্তাহব্যাপী চলা এই বৈঠকে।